দ্রুজ ধর্ম ও সমাজ: একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মতাত্ত্বিক পর্যালোচনা
দ্রুজ ধর্ম ও সমাজ: একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মতাত্ত্বিক পর্যালোচনা
দ্রজ ধর্ম (বা দ্রুজ ধর্ম)
মধ্যপ্রাচ্যের একটি স্বতন্ত্র এথনো-ধর্মীয় গোষ্ঠী, যারা নিজেদেরকে 'আল-মুওয়াহিদুন'
("একত্ববাদী" বা "ঐক্যবাদী") নামে অভিহিত করে, যা তাদের ঈশ্বরের
একত্ববাদের মূল মতবাদকে তুলে ধরে 1।
তারা নিজেদেরকে 'বনি মা'রুফ' ("পরোপকারের সন্তান") বলেও উল্লেখ করে 1। যদিও 'দ্রজ' নামটি ধর্মের প্রথম প্রচারকদের একজন, মুহাম্মদ বিন ইসমাইল
নাশতাফিন আদ-দারাজির নাম থেকে এসেছে, তবে তাকে পরবর্তীতে এই আন্দোলন থেকে ধর্মত্যাগী
ঘোষণা করা হয়েছিল 1। এই বাহ্যিক নামকরণ, যা তাদের নিজস্ব পরিচয় থেকে
ভিন্ন, একটি ঐতিহাসিক টানাপোড়েন নির্দেশ করে যেখানে একটি গোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ আত্ম-উপলব্ধি
এবং বাহ্যিক পরিচিতির মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়। একটি গোপনীয় সম্প্রদায়ের জন্য, এই বাহ্যিক
নামকরণ তাদের পরিচয়ের উপর বহিরাগত বর্ণনার প্রভাবকে তুলে ধরে, যা তাদের সংহতি ও আত্ম-সংজ্ঞায়নের
ঐতিহাসিক প্রয়োজনীয়তাকে আরও জোরদার করে।
দ্রজরা পশ্চিম এশিয়ার একটি আরব রহস্যময় ধর্মীয় গোষ্ঠী
2। যদিও তাদের ধর্ম ইসমাইলিজম থেকে উদ্ভূত হয়েছে,
তারা নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেয় না 2।
আরবি ভাষা ও সংস্কৃতি তাদের পরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয় 2। দ্রজ ধর্ম একটি আব্রাহামীয়, একেশ্বরবাদী এবং সমন্বয়বাদী ধর্ম, যা
ঈশ্বরের একত্ব, পুনর্জন্ম এবং আত্মার অমরত্বকে তার প্রধান নীতি হিসেবে তুলে ধরে 2। এর মতবাদগুলির একটি সারগ্রাহী ব্যবস্থা এবং এর সদস্যদের মধ্যে দৃঢ়
সংহতি ও আনুগত্য দ্বারা এটি বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত, যা তাদের বহু শতাব্দী ধরে তাদের ঘনিষ্ঠ
পরিচয় এবং স্বতন্ত্র বিশ্বাস বজায় রাখতে সক্ষম করেছে 3।
এই ধর্ম অত্যন্ত গোপনীয়
প্রকৃতির, এর বেশিরভাগ আচার-অনুষ্ঠান গোপন রাখা হয় এবং বাইরের কারো জন্য ধর্মান্তরিত
হওয়া অনুমোদিত নয় 2। দ্রজরা আধ্যাত্মিক ব্যক্তি, যাদেরকে 'উক্কাল'
("জ্ঞানী" বা "জাননেওয়ালা") বলা হয় এবং যারা ধর্মের গোপনীয়তা ধারণ
করে, এবং ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তি, যাদেরকে 'জুহাল' ("অজ্ঞ" বা "অজাননেওয়ালা")
বলা হয় এবং যারা জাগতিক বিষয়ে মনোনিবেশ করে, তাদের মধ্যে পার্থক্য করে 2। কেবলমাত্র 'উক্কাল'রাই পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলিতে প্রবেশাধিকার পান
7। এই গোপনীয়তা তাদের ঐতিহাসিক নিপীড়নের 1 এবং ধর্মান্তরকরণ বন্ধ করার 4
সিদ্ধান্তের সাথে গভীরভাবে জড়িত। নিপীড়নের মুখে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা এবং অনুপ্রবেশ
রোধ করার জন্য এই গোপনীয়তা একটি কার্যকর কৌশল হিসেবে কাজ করেছে। এটি একটি স্ব-টেকসই
প্রক্রিয়া তৈরি করেছে যেখানে গোপনীয়তা, প্রয়োজনের তাগিদে উদ্ভূত হয়ে, সম্প্রদায়ের
টিকে থাকা এবং স্বাতন্ত্র্য নিশ্চিত করার একটি সংজ্ঞায়িত বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে, যদিও
এর ফলে বহিরাগতদের কাছে এর বোধগম্যতা সীমিত হয়েছে।
ঐতিহাসিক উৎস ও বিবর্তন
দ্রজ ধর্মের উদ্ভব ও বিবর্তন
এর অনন্য পরিচয় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই ধর্ম মিশরে ইসমাইলি শিয়া ইসলামের
একটি শাখা হিসেবে ষষ্ঠ ফাতেমীয় খলিফা আল-হাকিম বি-আমর আল্লাহ-এর (৯৯৬-১০২১ খ্রিস্টাব্দে
শাসন) শাসনামলে আবির্ভূত হয় 3।
কিছু ইসমাইলি ধর্মতত্ত্ববিদ আল-হাকিমকে একটি ঐশ্বরিক সত্তা হিসেবে ঘোষণা করে একটি আন্দোলন
শুরু করেন, যা ১০১৭ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশ্যে প্রচারিত হয় এবং কায়রোতে দাঙ্গার সৃষ্টি
করে 3। ফাতেমীয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এই মতবাদকে ধর্মদ্রোহিতা
হিসেবে নিন্দা করে 3।
আল-হাকিমের শাসনামলে নতুন
ধর্ম, 'আল-তাওহিদ' (একত্ববাদ) এ যোগদানের জন্য 'আল-দাওয়া' (আহ্বান) শুরু হয়েছিল 7। মুহাম্মদ বিন ইসমাইল নাশতাফিন আদ-দারাজি ছিলেন এর প্রথম প্রচারকদের
একজন 1। তবে, আদ-দারাজি এবং হামজা বিন আলীর মধ্যে একটি
বিরোধ দেখা দেয়, মূলত আদ-দারাজির 'গুলুউ' ("অতিরঞ্জন") নিয়ে – ঈশ্বরের মানব
রূপে অবতারণা এবং নিজেকে "বিশ্বাসের তরবারি" ঘোষণা করার বিশ্বাস নিয়ে 2। আল-হাকিম হামজা বিন আলীকে সমর্থন করেন এবং আদ-দারাজিকে আন্দোলনের
মধ্যে ধর্মত্যাগী ঘোষণা করা হয় এবং পরবর্তীতে তিনি অদৃশ্য হয়ে যান, ধারণা করা হয় আল-হাকিমের
নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয়েছিল 3।
তা সত্ত্বেও, বহিরাগতরা এই আন্দোলনকে তার নামেই 'আল-দারাজিয়াহ' এবং 'আল-দুরুজ' নামে
অভিহিত করতে থাকে 3।
আল-হাকিম রহস্যজনকভাবে
১০২১ খ্রিস্টাব্দে অদৃশ্য হয়ে যান, এবং তার উত্তরসূরি আল-জাহিরের অধীনে আন্দোলনটি গুরুতর
নিপীড়নের শিকার হয় 3। হামজা আত্মগোপন করেন, এবং আল-মুকতানা বাহা আল-দিন
(আল-সামুকি নামেও পরিচিত) দ্রজদের নেতৃত্ব দেন 3। নিপীড়নের ফলস্বরূপ, দ্রজরা আত্মগোপন করে 7। এর কয়েক বছর পর, প্রায় ১০৪৩-১০৪৪ খ্রিস্টাব্দে, নতুন দ্রজ ধর্মে যোগদানের
আহ্বান বন্ধ হয়ে যায় 3। সেই থেকে, দ্রজ ধর্মে ধর্মান্তরকরণ অনুমোদিত নয়;
কেবলমাত্র দ্রজ পিতামাতার সন্তানরাই দ্রজ হিসেবে বিবেচিত হয় 4। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকে দেখলে, এই ধর্মান্তরকরণ বন্ধের সিদ্ধান্তটি
কেবল একটি ধর্মতাত্ত্বিক নীতি ছিল না, বরং এটি তাদের টিকে থাকার একটি বাস্তবসম্মত প্রতিক্রিয়া
ছিল। এই ঐতিহাসিক আঘাত তাদের বর্তমান সামাজিক কাঠামো এবং ধর্মীয় অনুশীলনের ভিত্তি তৈরি
করেছে, যা তাদের একচেটিয়া প্রকৃতিকে কেবল একটি মতবাদ নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক অভিযোজন
হিসেবে তুলে ধরে।
মিশরে এই ধর্ম ধীরে ধীরে
বিলুপ্ত হয়ে যায়, কিন্তু সিরিয়া ও লেবাননের বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে এটি টিকে থাকে, যেখানে
ধর্মপ্রচারকরা গুরুত্বপূর্ণ সম্প্রদায় গড়ে তুলেছিলেন 3। দ্রজরা প্রায়শই পার্বত্য অঞ্চলে বসতি স্থাপন করত তাদের নিরাপত্তার
অনুভূতি বাড়াতে এবং তাদের অনন্য ধর্মীয় পরিচয় বজায় রাখতে 1। এই ভৌগোলিক ঘনত্ব তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় এবং ধর্মীয় অনুশীলন সংরক্ষণে
সহায়তা করেছে 5। এই পার্বত্য অঞ্চলে বসতি স্থাপন কেবল একটি নিষ্ক্রিয়
পশ্চাদপসরণ ছিল না, বরং এটি একটি সক্রিয় কৌশল ছিল। পার্বত্য ভূখণ্ড প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা
প্রদান করত, যা তাদের বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণ (যেমন অটোমান সাম্রাজ্য 3) প্রতিরোধ করতে এবং স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখতে সক্ষম করেছিল। এই ভৌগোলিক
বিচ্ছিন্নতা তাদের গোপনীয় ধর্মতত্ত্ব এবং স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক অনুশীলনের বিকাশ ও সংরক্ষণে
সহায়তা করেছে 5, উল্লেখযোগ্য বাহ্যিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই। এটি ইঙ্গিত
দেয় যে একটি নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের জন্য, যারা একটি অনন্য এবং রহস্যময় বিশ্বাস ধারণ
করে, কৌশলগত বসতি স্থাপন দীর্ঘমেয়াদী সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যা তাদের সামাজিক ও ধর্মীয় একচেটিয়া প্রকৃতির পরিপূরক একটি শারীরিক
বাধা হিসেবে কাজ করেছে।
মূল বিশ্বাস ও ধর্মতত্ত্ব
দ্রজ ধর্মের মূল মতবাদগুলি এর সমন্বয়বাদী প্রকৃতি
এবং কেন্দ্রীয় নীতিগুলিকে তুলে ধরে।
তাওহিদ (ঈশ্বরের একত্ব) ধারণা
দ্রজ ধর্মের মূল নাম ছিল 'দিন আল-তাওহিদ' ("একত্ব/একত্বের ধর্ম"),
এবং এর অনুসারীদের 'আল-মুওয়াহহিদুন' ("যারা ঈশ্বরের একত্ব ঘোষণা করে") বলা
হয়, যা তাদের একেশ্বরবাদী মতবাদকে প্রকাশ করে 1।
এটি তাদের কেন্দ্রীয় ধর্মতাত্ত্বিক নীতি 5।
দ্রজরা ঈশ্বরের সাথে একটি বিমূর্ত এবং সরাসরি সংযোগে বিশ্বাস করে 7।
পুনর্জন্ম ও আত্মার অমরত্বের কেন্দ্রিকতা
দ্রজদের একটি প্রধান বিশ্বাস
হলো পুনর্জন্ম এবং আত্মার অমরত্ব 2।
মৃত্যুর পর আত্মা অবিলম্বে একটি নতুন মানবদেহে প্রবেশ করে 9। পুনর্জন্মের চক্র সম্পন্ন করার পর, আত্মা মহাজাগতিক মনের (আল-আকল
আল-কুল্লি) সাথে পুনরায় মিলিত হয় 2।
দ্রজরা বিশ্বাস করে যে এই জীবনের কর্মফল পরবর্তী জীবনকে প্রভাবিত করে 11। শেষ সময়ে, ঈশ্বর প্রতিটি আত্মাকে তার সমস্ত জীবনের কর্মের উপর ভিত্তি
করে স্বর্গ বা নরকে পাঠাবেন 7।
পুনর্জন্মকে দ্রজদের "প্রধান বিশ্বাস" হিসেবে বিবেচনা করা হয় 7। পুনর্জন্মের মুহূর্ত শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান হয়: যে শিশুরা
কাঁদে তারা তাদের পূর্বজন্মের স্বপ্ন দেখে; যে শিশুরা মৃত জন্মগ্রহণ করে তারা এমন আত্মার
উদাহরণ যা স্থানান্তরিত হয়নি 11।
পুনর্জন্মের এই বিশ্বাস কেবল একটি অধিবিদ্যাগত ধারণা নয়, এটি তাদের নৈতিক ব্যবস্থাকেও
সমর্থন করে। এই বিশ্বাস যে "এই জীবন পরবর্তী জীবনকে প্রভাবিত করে" এবং আত্মারা
তাদের সমস্ত জীবনের কর্মের উপর ভিত্তি করে
"শেষ সময়ে" বিচারিত হবে 7,
একটি ধারাবাহিক নৈতিক বাধ্যবাধকতা প্রদান করে। এটি ক্ষণস্থায়ী প্রায়শ্চিত্ত বা আচার-অনুষ্ঠানের
প্রয়োজনীয়তা দূর করে 8,
কারণ আধ্যাত্মিক হিসাব-নিকাশ নিরন্তর চলতে থাকে। অতএব, পুনর্জন্ম নৈতিক আচরণ এবং ব্যক্তিগত
জবাবদিহিতার প্রাথমিক চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে, যা তাদের বিশ্বতত্ত্বকে তাদের দৈনন্দিন
নৈতিক অনুশীলনের সাথে একীভূত করে।
বিভিন্ন ঐতিহ্যের প্রভাব
ইসমাইলিজম থেকে উদ্ভূত
হলেও, দ্রজ ধর্ম খ্রিস্টধর্ম, জ্ঞানবাদ, নিওপ্লাটোনিজম, জরাথুস্ট্রবাদ, ম্যানিকেইজম
এবং পিথাগোরিয়ানবাদ সহ বিভিন্ন ঐতিহ্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে 2। পণ্ডিতরা যুক্তি দেন যে দ্রজ বিশ্বাসগুলি কুরআন এবং গ্রীক, পারস্য
ও ভারতীয় দর্শনের উপর ভিত্তি করে গঠিত 7।
কেউ কেউ দাবি করেন যে এটি সুফিবাদ দ্বারা সুন্নি বা শিয়া বিশ্বাসের চেয়ে বেশি প্রভাবিত
হয়েছিল 7। এর ফলে একটি স্বতন্ত্র ও গোপনীয় ধর্মতত্ত্বের
বিকাশ ঘটেছে, যা ধর্মগ্রন্থের একটি রহস্যময় ব্যাখ্যার দ্বারা চিহ্নিত, যা মন এবং সত্যবাদিতার
গুরুত্বের উপর জোর দেয় 2।
দ্রজ ধর্ম বিভিন্ন দার্শনিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য থেকে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে, যা আব্রাহামীয়
ধর্ম, জ্ঞানবাদ, নিওপ্লাটোনিজম, জরাথুস্ট্রবাদ এবং এমনকি ভারতীয় দর্শনকেও অন্তর্ভুক্ত
করে 2। এই ব্যাপক সমন্বয়বাদ, বিভিন্ন নবীকে "একই
একেশ্বরবাদী ধারণার" পুনর্জন্ম হিসেবে দেখার বিশ্বাসের সাথে মিলিত হয়ে 8, একটি ধর্মতাত্ত্বিক কাঠামো নির্দেশ করে যা সার্বজনীন সত্যকে অন্তর্ভুক্ত
করার চেষ্টা করে। যদিও ধর্মটি বাইরের লোকদের জন্য বন্ধ, এই সমন্বয়বাদী পদ্ধতি তাদের
ঈশ্বরের একত্ব সম্পর্কে তাদের অনন্য বোঝার মধ্যে বিভিন্ন আধ্যাত্মিক পথকে স্বীকৃতি
দিতে এবং একীভূত করতে দেয়। এটি একটি অভ্যন্তরীণ অন্তর্ভুক্তির রূপ, যা বাহ্যিকভাবে
একচেটিয়া ব্যবস্থার মধ্যে বিদ্যমান, যা তাদের প্রধান ধর্মগুলির মধ্যে সাধারণ সূত্র
দেখতে সক্ষম করে এবং তাদের স্বতন্ত্র রহস্যময় পথ বজায় রাখে।
নবী ও উপদেষ্টাদের স্বীকৃতি
দ্রজরা তাদের বিশ্বাসকে
তিনটি একেশ্বরবাদী ধর্ম: ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম এবং ইসলাম-এর একটি নতুন ব্যাখ্যা
হিসেবে বিবেচনা করে 8। তারা শুয়াইবকে (বাইবেলের জেথ্রো, মোশির শ্বশুর
হিসেবে পরিচিত) তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নবী হিসেবে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করে 1। তারা আদম, নূহ, ইব্রাহিম, মোশি, যিশু, মুহাম্মদ এবং ইসমাইলি ইমাম
মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইলকে নবী হিসেবে গণ্য করে 2।
এছাড়াও, সালমান ফারসি, আল-খিদর (যাকে তারা এলিয়, জন ব্যাপটিস্ট এবং সেন্ট জর্জের সাথে
চিহ্নিত করে), আইয়ুব এবং লুক দ্য ইভাঞ্জেলিস্টের মতো ব্যক্তিত্বদের "উপদেষ্টা"
এবং "নবী" হিসেবে সম্মানিত করা হয় 2।
তারা বিশ্বাস করে যে এই সমস্ত নবী একই একেশ্বরবাদী ধারণার পুনর্জন্ম 8।
ধর্মীয় অনুশীলন ও পবিত্র গ্রন্থ
দ্রজ ধর্মীয় অনুশীলনের
স্বতন্ত্র প্রকৃতি, এর গোপনীয়তা এবং প্রচলিত আচার-অনুষ্ঠানের অনুপস্থিতি এটিকে অন্যান্য
ধর্ম থেকে আলাদা করে তোলে।
ধর্মের গোপনীয় প্রকৃতি
দ্রজদের বেশিরভাগ ধর্মীয়
অনুশীলন গোপন রাখা হয় 2।
ধর্মের শিক্ষার সম্পূর্ণ জ্ঞান কেবল 'উক্কাল' (দীক্ষিত/জ্ঞানী) দের জন্য সংরক্ষিত,
যখন 'জুহাল' (অদীক্ষিত/অজ্ঞ) ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্বাস গ্রহণ করে 5। দ্রজ সদস্যদের মধ্যে মাত্র ১০% ধর্মের ধর্মীয় অনুশীলনে দীক্ষিত 11। দ্রজ ধর্মীয় গ্রন্থগুলি কেবল 'উক্কাল'দের জন্য সহজলভ্য 8। দ্রজ গ্রন্থ এবং অনুশীলনের কঠোর গোপনীয়তা, যা কেবল 'উক্কাল'দের জন্য
অ্যাক্সেসযোগ্য 2, কেবল নিপীড়ন থেকে সুরক্ষার বাইরেও একাধিক কাজ
করে। প্রথমত, এটি একটি নির্বাচিত, অত্যন্ত জ্ঞানী গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাখ্যা সীমিত করে
মতবাদের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করে, বাহ্যিক প্রভাব বা অভ্যন্তরীণ বিচ্যুতি প্রতিরোধ করে।
দ্বিতীয়ত, এটি একটি শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ শ্রেণিবিন্যাস তৈরি করে এবং সম্প্রদায়ের বন্ধনকে
শক্তিশালী করে, কারণ ভাগ করা গোপন জ্ঞান 'উক্কাল'দের মধ্যে গভীর বিশ্বাস এবং সংহতি
তৈরি করে। তৃতীয়ত, 'জুহাল'দের জন্য, ঐতিহ্যের মাধ্যমে বিশ্বাস গ্রহণ 8 তাদের ধর্মীয় নেতাদের প্রতি একাত্মতা এবং বিশ্বাস স্থাপন করে, সম্পূর্ণ
মতবাদগত বোঝাপড়া ছাড়াই সংহতি বজায় রাখে। এই ব্যবস্থা রহস্যময় জ্ঞানের সংরক্ষণ এবং
সম্প্রদায়ের কাঠামোর স্থিতিশীলতা উভয়ই নিশ্চিত করে।
মূল গ্রন্থ: কিতাব আল-হিকমা (জ্ঞানীর পত্রাবলী)
এটি দ্রজ ধর্মের মৌলিক ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থ 2। এতে জ্ঞানী ব্যক্তিদের মধ্যে পত্রাবলী এবং চিঠিপত্রের একটি সংগ্রহ
অন্তর্ভুক্ত রয়েছে 7। এটি কেবল ধর্মীয় দ্রজদের ('উক্কাল') জন্য সহজলভ্য
7।
প্রচলিত আচার-অনুষ্ঠান ও অনুষ্ঠানের অনুপস্থিতি
দ্রজ ধর্মে কোন নির্দিষ্ট
দৈনিক উপাসনা, নির্ধারিত পবিত্র দিন বা তীর্থযাত্রার বাধ্যবাধকতা নেই 8। প্রার্থনা কেন্দ্রীয় নয় 11।
তারা বিশ্বাস করে যে আচার-অনুষ্ঠান এবং অনুষ্ঠান অন্যান্য একেশ্বরবাদী ধর্মগুলিকে
"বিশুদ্ধ বিশ্বাস" থেকে বিচ্যুত করেছে 8। তারা সর্বদা ঈশ্বরের সাথে তাদের আধ্যাত্মিক হিসাব-নিকাশ করে, যার
ফলে উপবাস বা প্রায়শ্চিত্তের বিশেষ দিনের প্রয়োজন হয় না 8। এটি ধর্মীয়তার অনুপস্থিতি নয় বরং এর একটি নতুন সংজ্ঞা। তারা বিশ্বাস
করে যে "ঈশ্বরের সাথে আধ্যাত্মিক হিসাব-নিকাশ" অবিচ্ছিন্ন 8 এবং সত্য বিশ্বাস সত্যবাদিতা ও সম্প্রদায়ের সমর্থনের মতো নৈতিক নীতিগুলির
প্রতি আনুগত্যের মধ্যে নিহিত 5।
এটি ধর্মের প্রতি একটি অত্যন্ত অভ্যন্তরীণ এবং দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করে, যেখানে
দৈনন্দিন আচরণ এবং নৈতিক সততা হলো উপাসনা। এই অভ্যন্তরীণ ফোকাস সম্ভবত নিপীড়নের প্রতিক্রিয়ায়
বিকশিত হয়েছিল, যেখানে জনসমক্ষে আচার-অনুষ্ঠান বিপজ্জনক হত, যার ফলে এমন একটি ব্যবস্থা
তৈরি হয়েছিল যেখানে বিশ্বাস পালনের চেয়ে জীবনযাপনে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
তবে, তারা অন্যান্য আরবদের
মতো কিছু উৎসব উদযাপন করে, যেমন ঈদুল আজহা, যা ইব্রাহিমের আত্মত্যাগকে সম্মান জানায়
7। এটি তাদের সাধারণ আচার-অনুষ্ঠানের অনুপস্থিতির
একটি ব্যতিক্রম।
পাঁচটি মূল নৈতিক নীতি
প্রচলিত ধর্মীয়
বাধ্যবাধকতার পরিবর্তে, দ্রজ জীবন মূল নৈতিক নীতি দ্বারা পরিচালিত হয়৫:
১. সত্য কথা বলা
(প্রার্থনার পরিবর্তে) 1।
২. সম্প্রদায়ের
সদস্যদের রক্ষা করা / ভাইদের সমর্থন করা (দানশীলতার পরিবর্তে) 1।
৩. পুরনো ধর্মমত
ত্যাগ করা (উপবাসের পরিবর্তে) 8। (অন্যান্য উৎস অনুযায়ী, "অন্যান্য ধর্ম প্রত্যাখ্যান"
এবং "অ-দ্রজ ও মন্দ থেকে বিচ্ছিন্নতা" 5)।
৪. ধর্মদ্রোহিতা
থেকে পবিত্রতা (তীর্থযাত্রার পরিবর্তে) 8।
৫. ঈশ্বরের একত্ব
গ্রহণ করা / ঈশ্বরের একত্বে বিশ্বাস 5।
৬. ঈশ্বরের ইচ্ছার
কাছে আত্মসমর্পণ (পবিত্র যুদ্ধের পরিবর্তে) 8।
সত্যবাদিতা 2 এবং
নৈতিক মূল্যবোধ/পারস্পরিক শ্রদ্ধাও 1 জোর দেওয়া হয়।
পবিত্র স্থান
দ্রজদের সবচেয়ে পবিত্র স্থান হলো নবী শুয়াইবের
(জেথ্রো) সমাধি, যা পূর্ব গালিলের হিটিনে অবস্থিত 1।
সামাজিক কাঠামো ও সাংস্কৃতিক পরিচয়
দ্রজ সম্প্রদায়ের সামাজিক সংগঠন এবং সাংস্কৃতিক
অনুশীলনগুলি তাদের পরিচয়কে সংজ্ঞায়িত করে।
সম্প্রদায়ের সংহতি ও পারিবারিক বন্ধন
দ্রজ সমাজ দৃঢ় সম্প্রদায়ের
সংহতি এবং আনুগত্য দ্বারা চিহ্নিত 3।
তারা দৃঢ় পারিবারিক বন্ধন এবং সম্মিলিত দায়িত্বের উপর জোর দেয় 5। সামাজিক সংগঠন বিস্তৃত পারিবারিক কাঠামো এবং গ্রাম সম্প্রদায়কে কেন্দ্র
করে গড়ে উঠেছে 5। 'আসাবিয়াহ' (গোষ্ঠী সংহতি) ধারণাটি এখনও শক্তিশালী,
যা কঠিন সময়ে পারস্পরিক সমর্থন ও সুরক্ষা প্রদান করে 5। এই সংহতি শতাব্দী ধরে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে দ্রজ পরিচয় সংরক্ষণে
অত্যাবশ্যক ছিল 5।
এন্ডোগামি ও আন্তঃবিবাহ
দ্রজ সাংস্কৃতিক অনুশীলনে
এন্ডোগামি (সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাহ) 5
এবং আন্তঃবিবাহ কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করা হয় 2।
এই অনুশীলন, ধর্মান্তরকরণ বন্ধের সাথে মিলিত হয়ে, বোঝায় যে বর্তমান দ্রজ জনসংখ্যা তাদের
একাদশ শতাব্দীর অনুসারীদের সরাসরি বংশধর 4।
এন্ডোগামির উপর দৃঢ় জোর এবং ধর্মান্তরকরণের নিষেধাজ্ঞা 4 কেবল সাংস্কৃতিক পছন্দ নয়, বরং দ্রজ পরিচয় এবং টিকে থাকার মৌলিক স্তম্ভ।
ঐতিহাসিক নিপীড়নের প্রেক্ষাপটে 1,
আন্তঃবিবাহ বা বাহ্যিক ধর্মান্তরকরণের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ বিশুদ্ধতা বজায় রাখা এবং
দুর্বলতা প্রতিরোধ করা তাদের স্বতন্ত্র এথনো-ধর্মীয় বংশের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে।
এই কৌশল তাদের প্রায় এক হাজার বছর ধরে তাদের অনন্য সংস্কৃতি সংরক্ষণ করতে সক্ষম করেছে
4, যা এই সামাজিক অনুশীলন এবং তাদের একটি সংহত সংখ্যালঘু
হিসেবে দীর্ঘস্থায়ী অস্তিত্বের মধ্যে একটি সরাসরি কার্যকারণ সম্পর্ক প্রদর্শন করে।
রীতিনীতি ও সম্মান কোড
সম্প্রদায়টি জন্ম, বিবাহ এবং মৃত্যুর মতো প্রধান
জীবন ইভেন্টগুলির চারপাশে স্বতন্ত্র রীতিনীতি বজায় রাখে, যা ধর্মীয় গুরুত্বের সাথে
সামাজিক উদযাপনকে মিশ্রিত করে 5।
সততা, আনুগত্য, সাহস এবং আতিথেয়তার উপর জোর দেওয়া সম্মান কোডগুলি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক
স্পর্শবিন্দু হিসেবে রয়ে গেছে 5।
ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক দিক
আরবি তাদের প্রাথমিক ভাষা,
এবং তারা আরবি ভাষা ও সংস্কৃতিকে তাদের পরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বজায় রাখে 2। তাদের উপভাষায় স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য এবং শব্দভাণ্ডার থাকতে পারে 5। অনেকে দ্বিভাষিক বা বহুভাষিক 5। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে ধর্মীয় পুরুষদের জন্য সাদা পাগড়ি এবং মহিলাদের
জন্য শালীন পোশাকের মতো স্বতন্ত্র উপাদান অন্তর্ভুক্ত থাকে 5। সাংস্কৃতিক সংক্রমণ প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কাঠামোর মাধ্যমে ঘটে,
যেখানে শিশুদের সম্প্রদায়ের মূল্যবোধ, ঐতিহাসিক আখ্যান এবং উপযুক্ত সামাজিক আচরণ শেখানোর
উপর উল্লেখযোগ্য জোর দেওয়া হয় 5।
ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানের মধ্যে মৌখিক ইতিহাস, কবিতা, সঙ্গীত এবং সম্প্রদায়ের জন্য অনন্য
নৃত্য রূপ, যেমন 'দাবকে' নৃত্য অন্তর্ভুক্ত 5।
ধর্মীয় সহনশীলতা (অভ্যন্তরীণ)
দ্রজ সমাজ ধর্মীয় সহনশীলতা
দ্বারা চিহ্নিত, এর লোকেরা ধর্মীয় বা ধর্মনিরপেক্ষ জীবনধারা বেছে নিতে স্বাধীন 1। সবাই ধর্মীয় হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয় না 11। দ্রজ নারীদের 'উক্কাল'দের সাথে যোগদানে পুরুষদের চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার
দেওয়া হয় কারণ তাদের "আধ্যাত্মিকভাবে আরও প্রস্তুত" বলে মনে করা হয়, যার
ফলে 'উক্কাল'দের মধ্যে পুরুষদের চেয়ে বেশি নারী রয়েছে 8। যদিও দ্রজ ধর্ম বাইরের লোকদের কাছে গোপনীয় এবং 'উক্কাল' ও 'জুহাল'দের
মধ্যে একটি স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে, তবে ধর্মীয় বা ধর্মনিরপেক্ষ জীবনধারার জন্য অভ্যন্তরীণ
সহনশীলতাও বিদ্যমান 1। এটি একটি সূক্ষ্ম সামাজিক চুক্তি নির্দেশ করে:
'উক্কাল'রা রহস্যময় জ্ঞান সংরক্ষণ করে, যখন 'জুহাল'রা ভাগ করা ঐতিহ্য এবং নৈতিক নীতির
মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পরিচয় এবং সম্প্রদায়ের সংহতি বজায় রাখে। এই অভ্যন্তরীণ নমনীয়তা
ব্যাপক অংশগ্রহণকে অনুমোদন করে এবং অভ্যন্তরীণ ঘর্ষণ হ্রাস করে, যা বাহ্যিক চাপের বিরুদ্ধে
সম্প্রদায়ের সম্মিলিত 'আসাবিয়াহ'কে 5
শক্তিশালী করে। ভাগ করা ইতিহাস এবং সম্মান কোড দ্বারা শক্তিশালী দৃঢ় অভ্যন্তরীণ বন্ধন,
ধর্মীয় পালনে অভ্যন্তরীণ বৈচিত্র্য সত্ত্বেও, তাদের বাহ্যিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলে
একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তি হিসেবে কাজ করতে সক্ষম করে।
ভৌগোলিক বন্টন ও জনসংখ্যা
দ্রজদের জনসংখ্যা বিশ্বব্যাপী
প্রায় ৮০০,০০০ থেকে ২ মিলিয়ন পর্যন্ত অনুমান করা হয় 2। তারা প্রধানত লেবানন, সিরিয়া এবং ইসরায়েলে বসবাস করে, জর্ডানে ছোট
সম্প্রদায় রয়েছে 2। লেবাননে তাদের বৃহত্তম ঘনত্ব রয়েছে 3, যেখানে তারা জনসংখ্যার ৫.৫% 2।
সিরিয়ায়, তারা জনসংখ্যার ৩-৪% গঠন করে 2,
বেশিরভাগই জাবাল আল-দ্রুজ ("দ্রুজ পর্বত") এর আশেপাশে বসতি স্থাপন করেছে
2। ইসরায়েলে, তারা জনসংখ্যার ১.৬-২% গঠন করে 2, ২০২২ সালে প্রায় ১৫০,০০০ জন ছিল 7। সবচেয়ে প্রাচীন এবং ঘনবসতিপূর্ণ দ্রজ সম্প্রদায়গুলি মাউন্ট লেবানন
এবং দক্ষিণ সিরিয়ায় বিদ্যমান 2।
বিশ্বব্যাপী দ্রজ জনসংখ্যার বন্টন (আনুমানিক)
|
দেশ |
আনুমানিক জনসংখ্যা |
দেশের জনসংখ্যার শতাংশ |
|
সিরিয়া |
৯৪৪,০০০ |
৪.০% |
|
লেবানন |
২৬০,০০০ |
৪.৫% |
|
ইসরায়েল |
১৫৬,০০০ |
১.৬% |
|
জর্ডান |
২৩,০০০ |
০.২% |
|
বিশ্বব্যাপী মোট |
১ - ২ মিলিয়ন (আনুমানিক) |
|
দ্রষ্টব্য: বিভিন্ন উৎসে লেবানন ও ইসরায়েলের শতাংশে
সামান্য তারতম্য দেখা যায়। উপরের সারণীটি বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার ডেটা থেকে প্রাপ্ত
একটি সুসংগত চিত্র উপস্থাপন করে 2।
দ্রজদের জনসংখ্যা অনুমানগুলিতে
ভিন্নতা 2 এবং লেবানন ও ইসরায়েলের শতাংশে সামান্য তারতম্য
2 ইঙ্গিত দেয় যে দ্রজদের সঠিক জনসংখ্যা, বিশেষ করে
তাদের গোপনীয় প্রকৃতি এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সম্প্রদায়ের কারণে, নির্ধারণ করা কঠিন
হতে পারে। এটি বন্ধ বা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলির অধ্যয়নের ক্ষেত্রে একটি বৃহত্তর চ্যালেঞ্জ
তুলে ধরে, যেখানে সরকারি আদমশুমারিগুলি সম্পূর্ণ চিত্র নাও পেতে পারে বা যেখানে অনুমানগুলি
বিভিন্ন পদ্ধতির উপর নির্ভর করে। এর অর্থ হলো, যেকোনো সংখ্যাগত ডেটা এর আনুমানিক প্রকৃতি
স্বীকার করে উপস্থাপন করা উচিত।
দ্রজ সম্প্রদায়গুলি ইউরোপীয়
দেশ, কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অনেক লাতিন আমেরিকান দেশেও বিদ্যমান 7। ভেনিজুয়েলা পর্যন্ত তাদের উপস্থিতি দেখা যায় 10। দ্রজরা প্রধানত নির্দিষ্ট পার্বত্য অঞ্চলে (মাউন্ট লেবানন, জাবাল
আল-দ্রুজ) কেন্দ্রীভূত 2।
এই ভৌগোলিক ঘনত্ব, যা প্রাথমিকভাবে টিকে থাকার একটি কৌশল ছিল 1, তাদের সংখ্যালঘু হওয়া সত্ত্বেও উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রভাব বজায়
রাখতে সক্ষম করেছে 2। নির্দিষ্ট এলাকায় তাদের সংখ্যা একত্রিত করার মাধ্যমে,
তারা সুসংহত রাজনৈতিক ব্লক গঠন করতে পারে, প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে 12, এবং এমনকি কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে প্রতিরোধ করতে পারে 3। এটি দেখায় যে কীভাবে একটি সংখ্যালঘু গোষ্ঠী একটি খণ্ডিত ভূ-রাজনৈতিক
পরিস্থিতিতে তার রাজনৈতিক ক্ষমতা বাড়াতে এবং তার স্বার্থ রক্ষা করতে আঞ্চলিক ধারাবাহিকতাকে
কাজে লাগাতে পারে।
অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্ক
দ্রজদের মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য ধর্মীয় ও জাতিগত
গোষ্ঠীর সাথে জটিল সম্পর্ক রয়েছে।
মূলধারার ইসলাম থেকে স্বতন্ত্র পরিচয়
ইসমাইলি শিয়া ইসলাম থেকে
উদ্ভূত হওয়া সত্ত্বেও, দ্রজরা নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেয় না 2। পণ্ডিতরা যুক্তি দেন যে দ্রজ ধর্ম ইসলাম থেকে একটি পৃথক ধর্ম, যা
সুন্নি বা শিয়া বিশ্বাসের চেয়ে সুফিবাদ দ্বারা বেশি প্রভাবিত 7। তারা প্রধান একেশ্বরবাদী ধর্মগুলির সাথে সংযুক্ত নয়, তবে তারা বিশ্বাস
করে যে ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম এবং ইসলামের নবীগণ ঈশ্বরের বার্তাবাহক ছিলেন 13।
বংশগত উৎস ও তুলনা
জেনেটিক গবেষণা ইঙ্গিত
দেয় যে দ্রজরা "লেভান্টাইন খ্রিস্টানদের সাথে প্রায় অভিন্ন" এবং বেশিরভাগ
মুসলিমদের মতো আরবদের সাথে মিশ্রিত বলে মনে হয় না 10। "আরবীয় অনুমান" অনুসারে, তারা ১২টি আরব উপজাতির বংশধর,
যারা প্রাথমিক ইসলামিক সময়ের আগে এবং সময়কালে লেভান্টে স্থানান্তরিত হয়েছিল, যাদের
মধ্যে কিছু খ্রিস্টানাইজড হয়েছিল, তারপর ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছিল এবং অবশেষে তাদের
চৌফ পর্বতের আমিররা দ্রজ ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিল 2।
ঐতিহাসিক মিথস্ক্রিয়া ও জোট
একটি ধর্মীয় সংখ্যালঘু
হিসেবে, তারা প্রায়শই বিভিন্ন মুসলিম শাসনের, যার মধ্যে সমসাময়িক ইসলামিক চরমপন্থাও
অন্তর্ভুক্ত, নিপীড়নের শিকার হয়েছে 2।
ক্রুসেডের সময়, দ্রজ সৈন্যরা ক্রুসেডারদের লেবাননের উপকূলে অগ্রযাত্রা প্রতিরোধে আইয়ুবীয়
এবং পরবর্তীতে মামলুক বাহিনীকে সহায়তা করেছিল 3।
তারা অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে যথেষ্ট স্বায়ত্তশাসন উপভোগ করত এবং প্রায়শই এর বিরুদ্ধে
বিদ্রোহ করত 3।
ইসরায়েলে, ১৯৪৮ সালের যুদ্ধে
সুন্নি নেতৃত্ব নবী শুয়াইবের সমাধির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুমকি দেওয়ার পর দ্রজরা ইহুদি
বাহিনীর পক্ষ নেয় 3। সেই থেকে দ্রজ সৈন্যরা প্রতিটি আরব-ইসরায়েলি যুদ্ধে
ইসরায়েলের পক্ষে যুদ্ধ করেছে 3।
এই জোটকে "টিকে থাকার একটি প্রক্রিয়া" হিসেবে দেখা হয় 4। দ্রজরা, একটি ঐতিহাসিকভাবে নিপীড়িত সংখ্যালঘু হিসেবে 2, তাৎক্ষণিক ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে কৌশলগত জোট গঠনের
একটি ধারাবাহিক প্রবণতা প্রদর্শন করেছে, কঠোর আদর্শিক সারিবদ্ধতার পরিবর্তে। ক্রুসেডারদের
বিরুদ্ধে আইয়ুবীয়/মামলুক বাহিনীকে তাদের সমর্থন 3 এবং বিশেষ করে ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলে ইহুদি বাহিনীর সাথে তাদের জোট 3 এর প্রধান উদাহরণ। এই "টিকে থাকার প্রক্রিয়া" 4 বাহ্যিক সম্পর্কের প্রতি একটি নমনীয় এবং বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ
করে, যা বৃহত্তর আঞ্চলিক বা ধর্মীয় সংহতির চেয়ে সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা এবং স্বার্থকে
অগ্রাধিকার দেয়। এটি প্রায়শই প্রতিকূল পরিবেশে চলাচলকারী এথনো-ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের
একটি মূল বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে।
লেবাননে, তারা একটি গুরুত্বপূর্ণ
রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করেছে 2।
১৯২০ সালে ফরাসিদের বৃহত্তর লেবানন সৃষ্টিকে তারা অপছন্দ করত, যা লেবানন ও সিরীয় দ্রজদের
রাজনৈতিক বিভাজনকে আনুষ্ঠানিক রূপ দেয় এবং ক্যাথলিক আধিপত্যকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়
12। কামাল জুম্বলাতের মতো প্রধান ব্যক্তিরা ১৯৬০-এর
দশকে আরব জাতীয়তাবাদ এবং ফিলিস্তিনি কারণকে সমর্থন করেছিলেন, লেবাননের রাজনৈতিক জীবনের
অ-সাম্প্রদায়িকীকরণের পক্ষে কথা বলেছিলেন 12।
লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময়, তারা নির্দিষ্ট এলাকায় কার্যত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরি
করে এবং শুফ থেকে খ্রিস্টান বাসিন্দাদের বহিষ্কার করে 12। তারা পরবর্তীতে তায়েফ চুক্তি গ্রহণ করে এবং দ্রজ আধিপত্যের কঠোর শর্তে
খ্রিস্টানদের প্রত্যাবর্তনে উৎসাহিত করে 12।
দ্রজদের পরিচয় তাদের অনন্য
বিশ্বাস এবং আরব সংস্কৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত 2।
তবে, তাদের ঐতিহাসিক জোট (যেমন ইসরায়েলের সাথে 3) এবং রাজনৈতিক পদক্ষেপ (যেমন ফরাসি শাসনের প্রতিরোধ 3; লেবাননে অভ্যন্তরীণ সংঘাত 12)
জাতীয় পরিচয়ের সাথে একটি সূক্ষ্ম সম্পর্ক প্রদর্শন করে। ইসরায়েলে, ভূমির সাথে তাদের
দৃঢ় সম্পর্ক এবং সামরিক পরিষেবা 3
পরিচয়ের একটি জটিল অনুভূতি তৈরি করে 4।
এটি ইঙ্গিত দেয় যে এথনো-ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির জন্য, জাতীয় আনুগত্য শর্তসাপেক্ষ এবং পরিবর্তনশীল
হতে পারে, প্রায়শই একটি একক, সর্বব্যাপী জাতীয় আদর্শের পরিবর্তে তাদের স্বতন্ত্র পরিচয়
এবং স্বার্থের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং সুরক্ষা দ্বারা আকৃতির হয়। এটি অভ্যন্তরীণ ও
বাহ্যিক উত্তেজনা তৈরি করে, যেমন ইসরায়েলে তাদের "পরিচয় সংকট" 7 বা লেবাননে সিরিয়া ইস্যুতে বিভাজন 12 দেখা যায়।
সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
দ্রজ সম্প্রদায় মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাত এবং সাম্প্রদায়িক
উত্তেজনার কারণে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।
আঞ্চলিক সংঘাত ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা মোকাবেলা
সিরিয়ায় সাম্প্রতিক সংঘর্ষে
ইসলামপন্থী দল, নিরাপত্তা বাহিনী এবং দ্রজ সংখ্যালঘুরা জড়িত, যা তাদের অনিশ্চিত নিরাপত্তাকে
আরও চাপগ্রস্ত করছে 6। আসাদ শাসনের পতনের ফলে "গভীরতর বিশৃঙ্খলা"
এবং দ্রজদের মধ্যে একটি দুর্বল কেন্দ্রীয় সরকার এবং শক্তিশালী মিলিশিয়াদের সমন্বয়ের
একটি "সুপ্রতিষ্ঠিত ভয়" তৈরি হয়েছে 16।
দ্রজদের টিকে থাকার জন্য ঐতিহাসিক নির্ভরতা ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা এবং অভ্যন্তরীণ সংহতির
উপর 1 এখন পোস্ট-আসাদ সিরিয়ার মতো গভীরভাবে খণ্ডিত রাষ্ট্রে
নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। যদিও তাদের 'আসাবিয়াহ' 5 তাদের তৃণমূল মিলিশিয়া বজায় রাখতে এবং কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে প্রতিরোধ
করতে সক্ষম করে 16, একটি শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রের অনুপস্থিতি
মানে তারা বিভিন্ন শক্তিশালী মিলিশিয়াদের কাছ থেকে একাধিক, প্রায়শই সাম্প্রদায়িক, হুমকির
সম্মুখীন 6। এই পরিস্থিতি তাদের একটি অনিশ্চিত ভারসাম্যের
মধ্যে ফেলে দেয়: স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখা এবং সুরক্ষা চাওয়া, প্রায়শই এমন বাহ্যিক অভিনেতাদের
কাছ থেকে যাদের উদ্দেশ্য স্বার্থপর হতে পারে 6।
তাদের ঐতিহাসিক টিকে থাকার প্রক্রিয়াগুলি রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের ভাঙ্গনের দ্বারা পরীক্ষিত
হচ্ছে, যা তাদের পূর্ববর্তী যুগের সুস্পষ্ট রাষ্ট্রীয় প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ
করে তুলছে।
সম্প্রদায়ের পরিচয় ও নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ
তারা ঐতিহাসিকভাবে বিভিন্ন
মুসলিম শাসনের, যার মধ্যে সমসাময়িক ইসলামিক চরমপন্থাও অন্তর্ভুক্ত, নিপীড়নের শিকার
হয়েছে 2। জাবহাত আল-নুসরার মতো জঙ্গি গোষ্ঠী দ্বারা সিরীয়
দ্রজদের উপর আক্রমণ অস্তিত্বগত ভয়কে বাড়িয়ে দিয়েছে 12। সম্প্রদায়টি সিরিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষের প্রতি সতর্ক, বিশেষ করে যাদের
জিহাদি সংযোগ রয়েছে 6। অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ বিদ্যমান, যেখানে তৃণমূল
দ্রজ মিলিশিয়ারা নিরস্ত্র হতে বা নতুন সামরিক বাহিনীতে একীভূত হতে অস্বীকার করছে, সরকারি
বাহিনীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িক লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করছে 16।
বাহ্যিক অভিনেতাদের ভূমিকা ও অভ্যন্তরীণ গতিশীলতা
দ্রজরা অভ্যন্তরীণ ইসলামপন্থীদের
সাথে জোটবদ্ধ হওয়া বা বিদেশী শক্তির উপর নির্ভর করার মধ্যে একটি চ্যালেঞ্জিং পছন্দের
মুখোমুখি 6। ইসরায়েল সিরিয়ায় দ্রজদের রক্ষা করার দাবি করে,
যা সমালোচকদের মতে হস্তক্ষেপ এবং ভূমি দখলের ন্যায্যতা প্রমাণ করতে ব্যবহৃত হয় 6। এটি দ্রজদের ঘিরে ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকিগুলিকে তুলে ধরে। ইরান-সমর্থিত
গোষ্ঠীগুলির সুরক্ষার অজুহাতে দক্ষিণ সিরিয়ায় অনুপ্রবেশের চেষ্টার খবর রয়েছে, যা অঞ্চলটিকে
আরও অস্থিতিশীল করতে পারে 16।
আরব লীগ বা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আঞ্চলিক কূটনীতি, সম্প্রদায়ের নেতাদের এবং রাষ্ট্রীয়
অভিনেতাদের মধ্যে মধ্যস্থতা করার জন্য প্রস্তাবিত হয়েছে, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন
এবং সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্বকে অগ্রাধিকার দেবে 16। এই পরিস্থিতি একটি বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক প্রবণতাকে চিত্রিত করে যেখানে
দুর্বল সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলি বাহ্যিক হস্তক্ষেপের জন্য হাতিয়ার বা ন্যায্যতা হিসেবে
ব্যবহৃত হতে পারে, যা তাদের নিরাপত্তা ও স্বায়ত্তশাসনকে আরও জটিল করে তোলে। দ্রজদের
জোটবদ্ধতার ঐতিহাসিক বাস্তববাদ 3
এখন একটি আরও জটিল, বহু-মেরু পরিবেশে কাজ করছে যেখানে প্রকৃত সমর্থন এবং কৌশলগত শোষণের
মধ্যে রেখা ক্রমশ অস্পষ্ট হয়ে উঠছে।
উপসংহার
দ্রজরা মধ্যপ্রাচ্যের একটি
স্বতন্ত্র এথনো-ধর্মীয় গোষ্ঠী, যারা নিজেদেরকে 'আল-মুওয়াহহিдун'
নামে অভিহিত করে এবং ঈশ্বরের একত্ব, পুনর্জন্ম এবং নৈতিক জীবনযাপনের উপর জোর দেয়, যা
প্রচলিত আচার-অনুষ্ঠানের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাদের ধর্মীয় অনুশীলনগুলি অত্যন্ত
গোপনীয়, যা ঐতিহাসিক নিপীড়নের প্রতিক্রিয়া এবং তাদের স্বতন্ত্র পরিচয় বজায় রাখার একটি
কৌশল হিসেবে বিকশিত হয়েছে। 'উক্কাল' এবং 'জুহাল'দের মধ্যে পার্থক্য এবং পবিত্র গ্রন্থগুলিতে
সীমিত প্রবেশাধিকার তাদের মতবাদগত বিশুদ্ধতা এবং সম্প্রদায়ের সংহতি নিশ্চিত করে।
ঐতিহাসিকভাবে, দ্রজরা নিপীড়ন,
কৌশলগত বসতি স্থাপন এবং বাস্তবসম্মত রাজনৈতিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের পরিচয় ও সংহতি
বজায় রাখার অসাধারণ ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। পার্বত্য অঞ্চলে তাদের বসতি তাদের স্বায়ত্তশাসন
বজায় রাখতে এবং বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম করেছে, যা তাদের টিকে থাকার
একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে তাদের সম্পর্ক প্রায়শই তাদের
নিজেদের নিরাপত্তা এবং স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হয়েছে, যা তাদের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে
একটি নমনীয় এবং অভিযোজনযোগ্য ভূমিকা পালন করতে সাহায্য করেছে।
তবে, সমসাময়িক মধ্যপ্রাচ্যের
সংঘাত এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দ্রজ সম্প্রদায়ের জন্য নতুন এবং জটিল চ্যালেঞ্জ তৈরি
করেছে। সিরিয়ার মতো ভঙ্গুর রাষ্ট্রগুলিতে, তাদের ঐতিহ্যবাহী টিকে থাকার প্রক্রিয়াগুলি
দুর্বল কেন্দ্রীয় সরকার এবং শক্তিশালী মিলিশিয়াদের দ্বারা পরীক্ষিত হচ্ছে। বাহ্যিক
অভিনেতাদের দ্বারা সংখ্যালঘু সুরক্ষার আড়ালে ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের ব্যবহার তাদের
নিরাপত্তা এবং স্বায়ত্তশাসনকে আরও জটিল করে তোলে। এই চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, দ্রজরা তাদের
অনন্য সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সত্তা বজায় রেখে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস ও আর্থ-রাজনৈতিক পরিদৃশ্য
গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ, যদিও প্রায়শই উপেক্ষিত, ভূমিকা পালন করে চলেছে। তাদের ভবিষ্যৎ
তাদের অভ্যন্তরীণ সংহতি এবং আঞ্চলিক গতিশীলতা মোকাবেলায় তাদের সক্ষমতার উপর নির্ভর
করবে।
Works cited
1.
Druze,
accessed June 11, 2025, https://www.nli.org.il/en/discover/israel-culture-and-society/groups-in-israeli-society/druze
2.
Druze
- Wikipedia, accessed June 11, 2025, https://en.wikipedia.org/wiki/Druze
3.
Druze
| History, Religion, People, Syria, Israel, Lebanon, Community, Arab, &
Facts | Britannica, accessed June 11, 2025, https://www.britannica.com/topic/Druze
4.
Druze
| Middle East And North Africa - Facts and Details, accessed June 11, 2025, https://africame.factsanddetails.com/article/entry-346.html
5.
The
Druze of Syria: History, Faith, and Cultural Identity - KFuture.Media, accessed
June 11, 2025, https://kfuture.media/the-druze-of-syria-history-faith-and-cultural-identity/
6.
Druze
Community - GKToday, accessed June 11, 2025, https://www.gktoday.in/druze-community/
7.
The
Druze Community in Israel - Jewish Studies - Oxford ..., accessed June 11,
2025, https://www.oxfordbibliographies.com/abstract/document/obo-9780199840731/obo-9780199840731-0182.xml
8.
History
& Overview of the Israeli Druze - Jewish Virtual Library, accessed June 11,
2025, https://www.jewishvirtuallibrary.org/history-and-overview-of-the-israeli-druze
9.
Druze
- Worldwide distribution - Worlddata.info, accessed June 11, 2025, https://www.worlddata.info/religions/druze.php
10.
Do
the Druze actually descend from Christians and not Muslims? - Reddit, accessed
June 11, 2025, https://www.reddit.com/r/druze/comments/1hn425n/do_the_druze_actually_descend_from_christians_and/
11.
Druze
Faith: A Philosophy Carried From Past to Present - Covering Religion, accessed
June 11, 2025, https://coveringreligion.org/2023/03/06/druze-faith-a-philosophy-carried-from-past-to-present/
12.
Druze
in Lebanon - Minority Rights Group, accessed June 11, 2025, https://minorityrights.org/communities/druze-2/
13.
Religions
Of Israel, accessed June 11, 2025, http://www.columbia.edu/itc/journalism/goldman/6002/client_edit/daily5.html
14.
kfuture.media,
accessed June 11, 2025, https://kfuture.media/the-druze-of-syria-history-faith-and-cultural-identity/#:~:text=Druze%20cultural%20practices%20emphasize%20endogamy,religious%20significance%20with%20social%20celebration.
15.
Druze
revolt | Druze Uprising, Mount Lebanon & Ottoman Empire - Britannica,
accessed June 11, 2025, https://www.britannica.com/event/Druze-revolt
16.
The
Importance of Regional Diplomacy for Syria's Druze - The Washington Institute,
accessed June 11, 2025, https://www.washingtoninstitute.org/policy-analysis/importance-regional-diplomacy-syrias-druze
